দিদারুল হৃদয়ঃ খাগড়াছড়ি: পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের মধ্যে মারমাদের প্রধান সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই। পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বর্ষবরণের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মারমাপাড়াতে বইছে জল উৎসবের জোয়ার। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর যেন উৎসবে মাতোয়ারা হয় উঠেছে পাহাড়ের মানুষ। আর মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জল উৎসবের আয়োজনের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু শেষ হচ্ছে। তবে মারমাদের পানি খেলা মধ্য দিয়ে বৈসাবী উৎসব শেষ হয়ে গেলেও এর রেশ থেকে যায় প্রায় পুরো এপ্রিল মাস জুড়ে। মূছে যাক গ্লানি, মুছে যাক জরা, অগ্নিম্লানে শুচি হোক ধরা”এই শ্লোগানে শুক্রবার (১২এপ্রিল) দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার রামছু বাজার বটতলী এলাকা থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে মহাসড়ক অতিক্রম করে শোভাযাত্রাটি আমতলীপাড়াতে গিয়ে শেষ হয়। শান্তির প্রতিক পায়রা উড়িয়ে সাংগ্রাই উৎসব উদ্বোধন ঘোষনা করেন গুইমারা রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল রাইসুল ইসলাম, এসপিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমপিল। এছাড়াও তিনি ঐতিহ্যবাহী পানি খেলাসহ বিভিন্ন খেলার উদ্বোধন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিন্দুকছড়ি জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল সৈয়দ পারভেজ মোস্তফা, পিএসসি জি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, গুইমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মেমং মারমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী, উপজেলা লেডিস ক্লাবের সভানেত্রী প্রিয়াংকা সরকার, হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মংশ্যে মারমা, স্থানীয় গনমাধ্যমের সাংবাদিকসহ উপজেলার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।এ সময় প্রধান অতিথি বলেন, সাংগ্রাই উৎসব শুধু মারমা সম্প্রদায়ের নয়, এ উৎসবকে এই এলাকায় বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের উৎসবে পরিণত করতে হবে। এ ধরনের অনুষ্ঠান এ এলাকায় বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করে তুলবে। তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে তা সবার মাঝে পৌঁছে দেওয়ার। এখানে বসবাসরত হিন্দু, মুসলমান, চাকমা, মারমাসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যেসব জাতিসত্তা রয়েছে তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এক কথায়, আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমাদের মাঝে কোনো ভেদাভেদ নাই। পার্বত্য চট্টগ্রামের সব ভাষাভাষী সম্প্রদায়ের বিশ্বাসকে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে যা যা করা প্রয়োজন তা করতে বর্তমান সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। যার যার যে ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে আমাদের সেগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। পুরনো বছরের সব গ্লানি মুছে ফেলে নতুন বছরের শুভ কামনার জন্য বৃহত্তম এ আয়োজন করা হয়।